ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক এখন লন্ডনে চিকিৎসাধীন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে ঢাকা উত্তরকে বদলে দিতে শুরু করেছিলেন তিনি।
তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ থেকে শুরু করে উত্তরা, গুলশান, বনানী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর এলাকার রাস্তাঘাট ও ফুটপাথ উন্নয়নে স্থাপন করেছেন দৃষ্টান্ত। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনও সমান্তরালভাবে কাজ করছেন। কিন্তু মেয়র আনিসুল হকের অনুপস্থিতিতে ঢাকা উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে উন্নয়ন কার্যক্রম। নতুন করে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড দখল করে নিচ্ছে সেই পুরনো অপরাধীরা। অন্যদিকে কাজের গতিও থমকে দাঁড়িয়েছে।
নগর উন্নয়নে সবাই আবার স্মরণ করছেন মেয়র আনিসুল হককে। নগরের বিভিন্ন এলাকায় তার জন্য দোয়া প্রার্থনাও হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিনি যেভাবে কাজ শুরু করেছিলেন কঠোরভাবে তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা জরুরি।
মেয়র অসুস্থ হওয়ার পর সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ডিএনসিসির কর্মকাণ্ড চলমান রাখতে তিন সদস্যের একটি প্যানেল মেয়র নির্বাচন করে। ইতিমধ্যে এ প্যানেল দায়িত্ব গ্রহণের এক মাস পার করেছে। জানা গেছে, গত এক মাসে ডিএনসিসিতে বড় ধরনের কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে আনিসুল হকের শুরু করে যাওয়া প্রকল্পগুলো তদারকির অভাবে চলছে দায়সারাভাবে। মেয়রের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে দখলদাররা আবার একটু করে দখল করছে উচ্ছেদ করা জায়গাগুলো। তেজগাঁও সাতরাস্তার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট দখল করে তৈরি করা হয়েছিল ট্রাকস্ট্যান্ড। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেয়র আনিসুল হক সেটি উচ্ছেদ করেছিলেন।
সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাত হলেই ট্রাকের হর্নে ভারি হয়ে যায় এলাকা। আস্তে আন্তে ট্রাকগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা হয় গলি রাস্তা থেকে শুরু করে মূল রাস্তার ওপরে। ঠিক আগের অবস্থায় চলে এসেছে আবার। বেলা গড়িয়ে দুপুর হলেও সরানো হয় না এসব ট্রাক।
এখন সারা দিন ধরেই ট্রাক দাঁড় করানো থাকে এখানে, ঠিক উচ্ছেদের আগে যেমন থাকত। ধীরে ধীরে দখলদাররা আগের অবস্থায় ফিরে এলেও টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের। মিরপুর রোকেয়া সরণির রাস্তা, শ্যামলীর ড্রেনেজ প্রকল্পসহ অধিকাংশ উন্নয়ন কাজে নেই কোনো গতি এবং তদারকি। রাস্তা ভেঙেচুরে একাকার কিন্তু সারাতে নেই কোনো উদ্যোগ।
ডিএনসিসির মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল ও আশপাশের এলাকায় রাস্তার ওপর দূরপাল্লার বাস দাঁড় করিয়ে রাখত পরিবহন শ্রমিকরা। এর ফলে প্রতিনিয়তই রাস্তায় তৈরি হতো যানজট। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে আনিসুল হক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সঙ্গে নিয়ে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড ও এর আশপাশের এলাকায় দূরপাল্লার বাসের বিশৃঙ্খল অবস্থা নিরসন করেন। এ সময় রাস্তায় কোনো পরিবহন রাখা হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
দীর্ঘদিন এলাকাটি সুশৃঙ্খল থাকলেও ডিএনসিসি মেয়রের অনুপস্থিতিতে এখন মূল রাস্তার পাশাপাশি আশপাশের সব গলি ছাড়িয়ে তেজগাঁও শিল্প এলাকার ভিতরের বিভিন্ন ছোট ছোট রাস্তায়ও দূরপাল্লার বাস রাখতে দেখা যায়। একইভাবে কল্যাণপুর থেকে গাবতলী পর্যন্ত মূল সড়কও কার পার্কিংমুক্ত রাখতে পারছে না ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। একইভাবে উত্তর সিটি এলাকার এলইডি বাতি লাগানো, ফুটপাথ সংস্কারসহ যাবতীয় উন্নয়ন প্রকল্পে চলে এসেছে ধীরগতি। তাই উত্তর সিটির উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন মেয়র আনিসুল হকের। তিনি যত দিন সুস্থ হয়ে না ফিরছেন তত দিন সার্বিক কাজ পরিচালনা করতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে।
উন্নয়ন বিপর্যয় আনিসের সিটিতে
Reviewed by BD News
on
অক্টোবর ১৩, ২০১৭
Rating:
Reviewed by BD News
on
অক্টোবর ১৩, ২০১৭
Rating:

কোন মন্তব্য নেই: