শুক্রবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “চাকরির বাজার আগে যেভাবে ছিল সেভাবে আর থাকবে না। এখন যেভাবে চাকরির বাজারে মানুষ আছে, ভবিষ্যতে সেটা একেবারে প্রয়োজনাতিরিক্ত হয়ে দাঁড়াবে। গুণগত পরিবর্তন না হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ুয়ারা হয়ে পড়বে চাকরিহীন।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আগা খান ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ফোরাম অন ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন ফর গ্লোবাল সিটিজেনস’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে শহীদুল ব্যাংকিং ব্যবস্থার অটোমেশনের কারণে চাকরির বাজার সংকুচিত হয়ে আসার উদাহরণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “সেজন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তনের দিকে যেতে হবে। কেবল শহরাঞ্চল নয়, গ্রামের দিকেও নজর দিতে হবে।”
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় গুণগত মানের শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির সময় নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সচিব বলেন, “শিক্ষা কিসের জন্য? ওই সময়ে এই প্রশ্নে অনেক প্রাণবন্ত বিতর্ক দেখেছি। কেউ কেউ বলছিলেন, শিক্ষা হচ্ছে চাকরি বাজারের জন্য। শিক্ষার মাধ্যমে চাকরি পাবে সেটাই শিক্ষার উদ্দেশ্য। কিন্তু সেটা কি যথেষ্ট?
“অন্যরা বললেন, না এটা যথেষ্ট নয়। আমরা শিক্ষায় মানবিক দিক দেখতে চাই। সেজন্য শিক্ষায় নৈতিকতা, মূল্যবোধ, সহনশীলতা এবং মানবাধিকারের বিষয়টি পঠন-পাঠন ও প্রশিক্ষণে নিয়ে আসতে হবে, যাতে বিশ্ব নাগরিক হওয়া যায়। চিন্তা করা যায় বৈশ্বিকভাবে, স্থানীয়ভাবে নয়।”
শহীদুল হক বলেন, “আমরা যখন এসডিজি নিয়ে আলাপ করছিলাম, তখন সবচেয়ে তথ্যপূর্ণ ও সংবেদনশীল ক্ষেত্র ছিল শিক্ষা। প্রত্যেকে একমত হয়েছিল যে, এখানে আমাদের যথাযথ বাজেট দেওয়া দরকার।… কেবল শিক্ষার হার বাড়ালে হবে না, তার সঙ্গে গুণগত মানও বজায় রাখতে হবে। সেজন্য শিক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।”
পরবর্তীতে ‘বৈচিত্র্য ও সহনশীলতা’ শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে আসার উদ্যোগ এসডিজিতে গ্রহণ করা হয় বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
তিনি বলেন, ভাল ছাত্র, ভাল রেজাল্ট ও ভাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ুয়ারা যখন পররাষ্ট্র দপ্তরে আসছে তখনও সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
“বুয়েট থেকে পাস করে আসছে, গণিতে অসাধারণ, প্রকৌশলে অসাধারণ। যখন পররাষ্ট্র দপ্তরে আসছে তখন একেবারে অকর্মন্য দেখা যায়। ওই কর্মকর্তাকে রিওরিয়েন্ট করার জন্য আমাদের শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।”
নির্দিষ্ট প্রশ্ন ও নির্দিষ্ট উত্তরের যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “বৃত্তের বাইরে চিন্তা করার পাশাপাশি শিক্ষায় উদ্ভাবনের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। বৈশ্বিক পর্যায়ে শিক্ষা পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে।”
অন্যদের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আসিফ-উজ-জামান, আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের বাংলাদেশ প্রতিনিধি মুনির এম মেরালি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (অর্থনীতি বিষয়ক) নাহিদা সোবহান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের পরামর্শক জেনেট জেমিসন এবং আগা খান একাডেমির গ্লোবাল ম্যানেজার ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট জোনাথন মার্শ অনুষ্ঠানে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
চাকরির জন্য পড়লে চাকরিহীন হতে হবে: পররাষ্ট্র সচিব
Reviewed by BD News
on
সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
Rating:
Reviewed by BD News
on
সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
Rating:

কোন মন্তব্য নেই: